আমাদের বর্তমান গন্তব্য হলো ডিমের চর/পক্ষীর চর সেখান থেকে সাগরে জাল ফেলা হবে ইলিশ মাছ ধরার জন্য।
বঙ্গপসাগরে সুমন মাঝির জীবন ও জীবিকার গল্প |
বর্তমান মৌসুমে তেমন একটা ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না। তবুও জীবিকার তাগিদে জেলেদের ছুটে যেতে হয় সাগরে। কারণ তাদের পরিবারের সবকিছু সাগরের উপর নির্ভরশীল। নদীতে মাছ না পেলে সংসারের উপর নেমে আসে চরম দুর্ভিক্ষ। তাই দুর্ভিক্ষের হাত থেকে বাঁচার জন্য। এই মৌসুমে ইলিশের সন্ধানে সাগরে ছুটে এসেছেন জেলেরা।
আমিও তাদের সঙ্গী হলাম, কিভাবে তারা ইলিশ মাছ ধরে আপনাদের সাথে শেয়ার করব এই উদ্দেশ্যে। সমুদ্রে দুদিন থাকবে তারা, যদি মাছ থাকে তাহলে কিছুদিন থাকবে কেমন প্রস্তুতি নিয়ে আসছে তারা। মাছ না থাকলে চলে যেতে হবে অন্য জাল নিয়ে আসতে হবে।
তো এখন আমি দেখবো ইলিশ মাছ ধরার জন্য কিভাবে নদীতে জাল ফেলা হয়। মাঝির নির্দেশের সাথে সাথে সবাই জাল ফেলার জন্য প্রস্তুত হয়। মাঝি হচ্ছে একটি ট্রলারে যে যে জেলে থাকে তাদের মধ্যে প্রধান, তাকে মাঝেমধ্যে সারেংও বলা হয়।
জালের মাথায় একটি নিশানা দেওয়া থাকে এটা থেকে জালের গতিবিধি দেখা হয় কোন দিকে কার জাল যায়। কারণ হাজার হাজার জেলের চাল একসাথে নদীতে ফেলা হয়।
নিশান ফেলার পর একজনে ফুলেট ধরিয়ে দিবে সুন্দর মত অন্যজনার হাতে যাতে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই জাল ফেলা যায়। ট্রলারের সামনের দিকে জালের অপর মাথায় ইটের মতো কিছু চারা দেওয়া থাকবে যা জ্বালকে তলিয়ে রাখবে।
দুজনে চারা ফেলবে দুজনে ফুলেট ফেলবে আমি তাদেরকে সাহায্য করলাম চারা ফেলায় একটু রিক্স কম তাই সেখানে গেলাম। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে জাল খেলা শেষ। তাই টলারের ময়লা আবর্জনা গুলো ধুয়ে ফেলতে হবে। আর এখন এই জালগুলো জোয়ার শেষ পর্যন্ত পানিতে থাকবে জোয়ার শেষ হওয়ার সাথে সাথে জালগুলো আবার তুলে ফেলা হবে।
এখন কাজ জোয়ার শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা তার মাঝে রান্নাবান্নার কাজ সেরে নেওয়া। মাছ কাটার জন্য একজন লেগে গেছে দুপুরে খাওয়ার জন্য ইলিশ মাছ কাটা হচ্ছে সাগরের একদম টাটকা ইলিশ কোন প্রকার বরফ ছাড় কি যে সুঘ্রানটা হচ্ছে তা বলে প্রকাশ করা যাবে না। মাছ কাটা এবং ধূয়ে দেওয়ার পালা ইয়াছিনের। রান্নার জন্য একদম রেডি মাছ গুলো।
অন্য দিকে রুবেল ভাত রান্না শেষ এখন ভাতের মার গেলে নিবে নদীতে কিভাবে ভাতের মার গালা হয়! রসি দিয়ে ভালো করে ভাতের হাড়ির সাথে বেঁধে নিতে হয়, না হয় ঢেউয়ে ভাত পরে যাবে। জেলেদের জীবনের সবটুকু জুড়েই যেন সংগ্রাম।
এখন মাছ রান্নার দায়িত্ব সুমন মাঝির কড়া করে একটা বাজি দিবে তিনি। তেলে কষিয়ে নিচ্ছে মাছ গুলো কি দারুণ একটা ঘ্রাণ বের হচ্ছে তা বলে বুঝাতে পারবো না।
দুপুরের খাবার শেষ করে একটু বিশ্রাম করে নিয়ে সাবাই রেডি ট্রলারে জাল তোলার জন্য জাল টানছে তবে ইলিশ তেমনটা নেই বললেই চলে, আমিও তাদের সাহায্য করলাম কারন আমার লোভ ছিল জীবিত ইলিশ ছুয়ে দেখার।
আজকের মতো এখানে মাছ ধরা শেষ সুমন মাঝি আবার রওনা দিলো পক্ষীর দিয়া। যেতে যেতে মাছ গুলো বরফ দিতে হবে।
এবারে দেখবো ইলিশ গুলো কিভাবে সংগ্রহ করে তারা ককসেটে বরফ দিয়ে মাছ গুলো রাখা হয়। ইঞ্জিন রুমে কাছেই আলাদা করে।
এই যে এটা দেখতে পাচ্ছেন এটা ইঞ্জিন রুম এটা সব চেয়ে সেনসেটিভ জায়গা ট্রলারের এখানে সাবধানে আসতে হয়।
পক্ষীর দিয়া গিয়ে মাছের গতি বুুঝে সিদ্ধান্ত নিবে সুমন মাঝি। নদীতে থাকবে নাকি চলে যাবে। এখানে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে অন্য জেলেরা ও এখনে আছে মাছের গতি ভালো না তাই সকালে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিতে হবে অন্য জাল নিয়ে আসতে হবে।
0 মন্তব্যসমূহ