বিজ্ঞাপন

সপ্তম শ্রেণির শরীফ থেকে শরীফা হবার গল্প

সপ্তম  শ্রেণির পাঠ্যবই- ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বিষয়ের ৩৯ ও ৪০ পৃষ্ঠায় থাকা শরীফ থেকে শরীফা হয়ে ওঠার গল্পটি সোস্যাল মিডিয়াতে ঝড় তুলেছে। আসলে এ গল্পে কি আছে? যে গল্পের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বা ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক জনাব আসিফ মাহতাব সাহেব চাকরি হারালেন।  

থেকে শরীফা হয়ে ওঠার গল্প
 থেকে শরীফা হয়ে ওঠার গল্প

পাঠ্য বইটি হাতে নিয়ে আসিফ মাহতাব সাহেব উক্ত গল্পের পেইজ দুটি ছিঁড়ে প্রতিবাদ করেন। তিনি রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান নতুন কারিকুলামে পাঠ্যপুস্তকের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ শীর্ষক সেমিনারে এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।

আসিফ মাহতাব সাহেব সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই- ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইটি মঞ্চে নিয়ে আসেন। পরে আলোচনার এক পর্যায়ে বইটি সবার সামনে নিয়ে বলেন। “বইয়ের দোকানে যাবেন, আমি এই বইটি  বাজার থেকে ৮০ টাকা দিয়ে কিনেছি, আপনারা বইটি কিনবেন, কিনে – এই যে বইটিতে শরীফ-শরীফার গল্পের দুইটা পাতা ছিঁড়বেন, ছিঁড়ার পরে আপনারা বইটা আবার দোকানদারকে দিয়ে দেবেন, দোকানদারকে বলবেন অর্ধেক দামে বিক্রি করতে, যাতে মানুষের এওয়ার্নেস হয়,  আমাদের প্রতিবাদ এটা হতে পারে- আমার টাকা দিয়ে আমি ছিঁড়ব।” তিনি পাঠ্যবইটির মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

থেকে শরীফা হয়ে ওঠার গল্পটি
 আসিফ মাহতাব সাহেবের এ বক্তব্যের সময়

আসিফ মাহতাব সাহেবের এ বক্তব্যের পর তাকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করেছেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জনৈক কর্মকর্তা মুটোফোনের মাধ্যমে কল করে তাকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে আর না যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। আসিফ মাহতাব সাহেব প্রতি উত্তরে চাকরিতে কেন যোগদান করবেন না, তার কারণ একটি লিখিত বিবৃতি অফিসিয়াল ইমেইলের মাধ্যমে জানাতে বললেন। কিন্তু জনৈক কর্মকর্তা লিখিত কোনো নির্দেশনা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানালেন।

এ ব্যাপারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তপক্ষের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ একটি লিখিত বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিটি নিচে উপস্থাপন করা হলোঃ

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বক্তব্যঃ

আসিফ মাহতাব উৎস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সাথে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার কর্মী এবং তাদের চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যাম্পাসে সবার মাঝে সহযোগিতামূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সৌহার্দাপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে। – অফিস অফ কমিউনিকেশন্স ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।

শরীফ থেকে শরিফা হবার গল্পে কী আছে?

(পাঠ্য বই; পৃষ্ঠা: ৩৯-৪০)

নতুন পরিচয়:

পরের ক্লাসে খুশি আপা একজন অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। তিনি বললেন, ইনি ছোটবেলায় তোমাদের স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। আজ এসেছেন, নিজের স্কুলটা দেখতে। সুমন জানতে চাইল, আপনার নাম কী? তিনি বললেন, আমার নাম শরীফা আকতার।

শরীফা

শরীফা বললেন, যখন আমি তোমাদের স্কুলে পড়তাম তখন আমার নাম ছিল শরীফ আহমেদ। আনুচিং অবাক হয়ে বলল, আপনি ছেলে থেকে মেয়ে হলেন কী করে? শরীফা বললেন, আমি তখনও যা ছিলাম এখনও তাই আছি। নামটা কেবল বদলেছি। ওরা শরীফার কথা যেন ঠিকঠাক বুঝতে পারল না।

আনাই তাকে জিজ্ঞেস করল, আপনার বাড়ি কোথায়? শরীফা বললেন, আমার বাড়ি বেশ কাছে। কিন্তু আমি এখন দূরে থাকি। আনাই মাথা নেড়ে বলল, বুঝেছি, আমার পরিবার যেমন অন্য জায়গা থেকে এখানে এসেছে, আপনার পরিবারও তেমনি এখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছে। শরীফা বললেন, তা নয়। আমার পরিবার এখানেই আছে। আমি তাদের ছেড়ে দূরে গিয়ে অচেনা মানুষদের সঙ্গে থাকতে শুরু করেছি। এখন সেটাই আমার পরিবার। তাদের অবাক হতে দেখে শরীফা এবার নিজের জীবনের কথা বলতে শুরু করলেন।

সপ্তম শ্রেণির শরীফ থেকে শরীফ হবার গল্প
 থেকে শরীফা হয়ে ওঠার গল্পটি

সপ্তম শ্রেণির শরীফ থেকে শরীফ হবার গল্প
 থেকে শরীফা হয়ে ওঠার গল্পটি



ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় | আসিফ মাহাতাব | শরীফ থেকে শরিফা 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মেয়ে পরীক্ষার হলে, বাইরে অপেক্ষারত মায়ের মৃত্যু