তারা বানুর একমাত্র মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল ১০ বছর আগে মারা যাওয়ার পরে স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটা। বানুর বয়স এখন প্রায় ৯০ ছুইছুই এই বৃদ্ধ শরীর নিয়ে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে খেয়ে নাখেয়ে কোনভাবে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে সময় পার করছেন বহুবছর ধরে।
সর্বনাশা ঘুর্ণিঝড় তারা বানুকে করেছে নিঃস্ব |
স্বামীর ভিটা টুকুও হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা বানু। চোখের দিকে তাকালে দেখা যায় সমস্ত জীবনের প্রতিকূলতার ছবি যা মন না চাইলেও মেনে নিতে হয়।
এ যেন মরার উপর খাড়া ঘা, একমাত্র আশ্রয়স্থল টুকুও কেঁড়ে নিতে কার্পণ্য করেনি সর্বনাশা ঘুর্ণিঝড় রেমাল। এই বুড়ো বয়সে কার কাছে যাবে, কোথায় থাকবে, কি করবে এবং কি খাবে কিছুই বুঝতে পারছেনা তারা বানু। এগুলো বলতেছিলো আর দু-চোখের পানি টলটল করতে ছিল। একটু কান্না করতে পারলে হয়তো নিজেকে হালকা মনে করতে পারতো কিন্তু কান্নাও আসে না বুকের উপরে যেন পাথর পরে আছে।
তারা বানুর ভাঙা ঘর |
বন্যায় কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘বাবা মোর কিছুই নাই এহোন এই জায়গায় মোর ঘর আলহে এহোন ঘরের কোন চিনা নাই।’ বানুর ঘর যেখানে ছিলো সেখানে এক রাতের ব্যবোধানে নদী ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। এখন কই থাকেন, মানের ঘরে থাহি। আচ্ছা চলেনতো দেখে আসি কোথায় থাকেন, বানু বললো এই রাস্তার পাশে থাহি কি হরমু বাবা অ্যা ছাড়া আর জায়গা নাই।
এখন যেখানে থাকে সেখানেও মানুষ থাকার মতো কোন পরিবেশ নাই বলা যায়। নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধে উপরে একচালা ছাউনির নিচে বসবাস। ছাউনির ঠিক নিচে বেড়িবাঁধ তারও একপাশের মাটি নদীর পানিতে ধুয়ে গেছে, যেকোন সময় এটিও নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।
বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার জিনতলা বেড়িবাঁধের উপরে বসবাস এই বৃদ্ধা মহিলার।
0 মন্তব্যসমূহ